হাকীমুল উম্মত
হযরত মাওলানা শাহ আশরাফ আলী থানভী (রহঃ) –এর বিশিষ্ট খলীফা মুহিউস সুন্নাহ,
বর্তমান শতাব্দীর মুজাদ্দিদ হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক ছাহেব (রহঃ) বলেন, আপনারা
বাজার হতে যখন গোশত বা কোন পণ্য খরিদ করে আনেন, তখন সেটাকে অত্যন্ত হিফাযতের সাথে
ঢেকে আনেন, যাতে চিল ইত্যাদি উক্ত গোশত নিতে না পারে। তেমনিভাবে একশত টাকার নোট
ভিতরের পকেটে সীনার সাথে মিলিয়ে রাখেন, যাতে চোর পকেট কেটে টাকা নিতে না পারে।
খাদ্যদ্রব্যকেও ঢেকে রাখা হয়, যাতে ইঁদুর, বিড়াল ইত্যাদি প্রাণী তা খেয়ে না ফেলে।
এখন আপনারাই
বলুন ! মহিলাদের মূল্য কি আপনাদের নিকট এক সের গোশত, একশত টাকার নোট বা সামান্য
খাদ্যদ্রব্যের মূল্যের চেয়েও কম যে মহিলাদের হিফাযতের জন্য পর্দায় রাখতে আপনারা যত্নবান নন ?
অপরদিকে গোশত
নিজে উড়ে চিলের নিকট, একশত টাকার নোট চোরের নিকট, খাদ্যদ্রব্য ইঁদুরের গর্তে একা
যেতে পারে না। তা সত্ত্বেও এত হিফাযতের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু মহিলাদের তো নিজেদের
উড়ার ক্ষমতা রয়েছে অর্থাৎ মহিলাদের কারো প্রেমের জালে আবদ্ধ হয়ে পলায়নের ক্ষমতা
রয়েছে। এরপরও কি তাদের দ্বীনি তা’লীম ও পর্দার ব্যবস্থা দ্বারা হিফাযতের প্রয়োজন
নেই ?
অনেকেই আমরা
নিজেদের বুদ্ধিজীবী দাবী করি। সত্যিকারার্থে বুদ্ধিজীবী হয়ে থাকলে চিন্তা করে দেখা
উচিত যে, মহিলাদেরকে পর্দায় রাখার প্রয়োজন আছে কিনা ? [মাজালিসে আবরার পৃষ্ঠা ৩২]
তাছাড়া দাম্পত্য
জীবনের সুখ-শান্তি ও মহিলাদের হিফাযতের জন্যই আল্লাহ্ তা’আলা পর্দার বিধান চালু
করেছেন। পর্দাই নারীর সারা জীবনের নিরাপত্তার চাবিকাঠি। কারন, মানুষের রূপ-লাবণ্য,
সৌন্দর্য ও যৌবন ক্ষণস্থায়ী, যৌবনের রূপ-লাবণ্যের আকর্ষণ বার্ধক্যে আর থাকে না।
সুতরাং, স্ত্রী বার্ধক্যে উপনীত হলে তার প্রতি স্বামীর যৌন আকর্ষণ ধীরে ধীরে হ্রাস
পেতে থাকে।
এ পরিস্থিতিতে
পর্দার বিধান না থাকলে স্বামী রাস্তার বেগানা যুবতী মহিলাদের রূপ-লাবণ্যে মুগ্ধ
হয়ে তার পিছনেই দৌড়াবে, তাদেরকে নিয়েই ব্যস্ত থাকবে, জীবন সঙ্গিনীর কোন খবরই নিবে
না। পরিশেষে বৃদ্ধা বয়সে মহিলাদের পরিণাম এই দাঁড়াবে যে, সুখের জীবন আগুনে দাউ দাউ
করে জ্বলবে। বার্ধক্যে তার দেখাশোনার কেউ থাকবে না, অথচ বার্ধক্যে দেখাশোনার
প্রয়োজন আরো বেশি।
সুতরাং
কোরআন-হাদীস ছাড়াও যুক্তি বা বিবেকের দাবীও এটা যে, পর্দা নারী জাতির ইজ্জতকে
হিফাযত করে; তাদের জীবনকে করে সুখময়।
তাছাড়া পর্দা
কখনো মহিলাদের জন্য অপমানজনক নয়। আপনি স্বর্ণ-রূপা, হীরক খণ্ড কিভাবে লোকচক্ষু
থেকে আড়াল করে হিফাযত করেন ? আলমারীর সিন্দুক, তার মধ্যে কুঠরী, তার মধ্যে ঐগুলোকে
রাখেন। এতে কি ঐসব বস্তুর অবমাননা হয় ? না-কি সেগুলো অতিমূল্যবান হওয়া প্রমাণিত হয়
? পর্দার বিষয়টি ঠিক অনুরূপ। তাদের অধিক মূল্যবান (এমন কি নবী-অলীগণও তাদের পেতে
জন্ম নিয়েছেন) হওয়ায় তাদের হিফাযতের লক্ষ্যে পর্দার হুকুম দেয়া হয়েছে।
সংগ্রহঃ
[কিতাবুস সুন্নাহ, শর’ই পর্দা অংশ থেকে]
0 মন্তব্য(গুলি)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন